৩
টি পুনরাধুনিক কবিতা
১।সঙ্গীতাদের বাড়ি
বৃষ্টির সময় দুলতে থাকা হলুদ কল্কি ফুলগুলো থেকে লাভ দিয়ে বেড়িয়ে
আসে কতগুলো কালো বেড়াল... তাদের চোখ
চকচক করে খিদেয়...আমাকে খেতেই কি আসছিল?
বেড়ালগুলো একসাথে চেল্লায়... নিঃশ্বাস ছাড়ে ... ভয়ে ঠান্ডা হয়ে উঠি, কল্কি ফুলগাছ দৌড়ে পালিয়ে যায় পূবদিকে।
এই বিড়ালগুলো লাফিয়ে পড়ল। তারপর টের পাবে , আমার ভেতরে আসলে একটা ফাঁপা
এরোপ্লেন হাঙরের মত ভাসছে...... কিচ্ছু নেই
তাতে।
এভাবেই বৃষ্টি থেমে যাচ্ছে। কল্কি ফুলগাছটা আবার কোত্থেকে দৌড়ে এসে বসে পড়ল। কালো বেড়ালগুলো পটাপট সাদা-নীল হয়ে ফ্যাঁচফ্যাঁচ
করে লাফ দিয়ে ঢুকে যায় ফুলের ওপর। ফুলগুলো ডালপালাসুদ্ধ
এমন ভাবে হাসতে থাকে যেন এতক্ষণ কিছুই হয়নি। আমি আর কোনদিন
সঙ্গীতাদের বাড়ি যাব না। ফুল ছোঁব না। কাউকে জানতেই দেব না আমি
২। অভিষেকদাকে,
“আইসোলেশন ইস অ্যা গিফট”
চিনির কৌটো উপড় হয়ে পড়ে গেলে
বৃষ্টি...
শেষ চিনির দানার মত বিচ্ছিন্নতা চাই।
সব কিছু ছেড়ে...
উড়ে যাওয়া পাখির ঝাঁক থেকে একা হয়ে যাওয়া শেষ পাখিটার মত...
আমি হিংসেয় বাঁচছিলাম। আমি হিংসেয় মরছিলাম।
এতটা উদাস হয়ে যাব যেন, কারো হিংসে শুনতে না পাই, এতটা দূরে চলে যাব , যেন চিৎকার করলেও আমার হিংসে কেউ শুনতে না পায়।
৩। বড়মামা
তিস্তা তিস্তা খেলা। ব্রিজ ব্রিজ... একটু একটু মামাবাড়ির কাঁঠালগাছে বাঁধা দোলনা...গাড়ি যায় তার দুদিকে... কিছু ছেলেমেয়ে খেলছে। ওরা আমারই মামাতো ভাইবোন সব। বড়মামা চলে গেল সেদিন। গেল মানে গেলই।
ঠিক কেমন যাওয়া হলে মামির গলার স্বর অমন ভেঙে যাওয়া জামরুলের
মত হয়? উঠোনে মামার ছবি রাখা। এই আছি... এই নেই... সব ঘোড়াই একদিন নতুন ডানা পায়... সেই যে উপরের দিকে উঠে যায়, আর নীচে নামতে
পারে না। মা কাঁদছে। ধূপ-ধুনো থেকে মামা বেড়িয়ে এসে বলবে - “রোজ সকালে উঠে জগিং করবি। ” আর মামির
দিকে তাকিয়ে হেসে বলবে - “কেমন! চলে এলাম তো!” মামা আরো
নেই হয়ে যায় যত মূহুর্ত যায়... আরো আরো নেই।
সেই তিস্তা ব্রিজের ওপর ছেলেমেয়েদের দল খেলছে। আমি তিস্তা পেরিয়ে বাড়ি ফিরছি। গাড়ি ছুটছে ...
কবিতা, কবিতা শোন, মামাকে ফিরিয়ে দাও বাড়িতে। অন্তত মাঝেমধ্যে ফোন করুক, গান শুনতে
চাক। অন্তত চুপ করে শুয়ে থাকুক। মামার সামনের ধূপটা সরে যায় আজকের মত, কাল আবার বসবে।
সূর্য ডুবে গেলে ঈশ্বরের ভাবনা শুরু হয়; কাল আবার কার ঘর থেকে কাকে নিয়ে যাবেন।
বড্ড ভালো লিখেছ। বেশ ভালো। মামার জন্য হাহাকার মনকেমনিয়া হাওয়া বইয়ে দিল।
ReplyDeleteচুপ চাপ ফুটো ফাটা বুক রেখে hide করে নেয় নিজেকে এমন কবিতা
ReplyDeleteতৃতীয় টি ভালো, হয়েছে খুব@ অভিষেক
ReplyDeleteBlock korechho fb the keno ?
Deleteসবকথা সবার হয়না।কিন্তু তোর এই তিনটে লেখা যেন সবার কথাই বলে গেল
ReplyDeleteAchha. Besh. Asha korechhilAm tai
Deletethank you
ReplyDeleteরাজাদা, ধন্যবাদ।
ReplyDeleteবেনেসাঁ, মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম।
ReplyDeleteভীষণ স্নিগ্ধ পরশ পেলাম রেনেসাঁ। বিষণ্ণ ভালোলাগা।
ReplyDeleteবড়মামা, দারুণ........
ReplyDelete